বিশেষ প্রতিনিধি
ফেনীতে পুলিশের দেয়া গায়েবী মামলায় এসএম ইউসুফ আলী নামে এক সাংবাদিককে সোমবার গভীর রাতে গ্রেপ্তার করেছে দাগনভূঞা থানা পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে তাকে কোমরে রশি বেঁধে আদালতে তোলা হয়। এ ঘটনায় জেলায় কর্মরত সাংবাদিক ও সচেতন মহল ক্ষোভ ও নিন্দা জানান।
আদালত সূত্র জানায়, ইউসুফ আলীকে বিশেষ ক্ষমতা আইনের একটি মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল-হাজতে প্রেরণ করে। গ্রেপ্তার ইউসুফ দৈনিক অধিকার ও সংবাদ সারাবেলা এর ফেনী প্রতিনিধি ও অনলাইন পোর্টাল ফেনী রিপোর্ট এর সম্পাদক এবং দাগনভূঞা উপজেলার পূর্বচন্দ্রপুর ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামের বাসিন্দা।
ইউসুফ আলীর মামলার আইনজীবী এম, শাহজাহান সাজু জানান, ফেনীর সাবেক পুলিশ সুপার প্রতিসিংসা বসত ২০১৯ সালে সাংবাদিক ইউসুফ আলীসহ ৪ জন সাংবাদিককে জেলার বিভিন্ন থানায় দায়েরকৃত রাজনৈতিক মামলায় হয়রানিমূলকভাবে চার্জশীটে যুক্ত করে দেন। এসব মামলার এজাহারে তাদের কারোই নাম ছিল না। পরবর্তীতে সবকটি মামলায় তারা জামিন লাভ করে আদালতে হাজিরা দিয়ে আসছিলেন। ছাগলনাইয়া থানায় দায়েরকৃত একটি মামলায় ভুলক্রমে হাজিরা দিতে না পারায় ইউসুফ আলীর জামিন বাতিল হয়। পুলিশ সোমবার রাত দেড়টার দিকে তাকে ঘুম থেকে তুলে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। এদিকে ইউসুফ আলীর গ্রেপ্তারের পর কোমরে রশি বেঁধে আদালতে তোলার খবরে ফেনীতে কর্মরত গণমাধ্যম কর্মী ও সচেতন মহলে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দাগনভূঞা থানা পুলিশ তাকে কোমরে রশি বেঁধে আদালত প্রাঙ্গণে নিয়ে আসলে সাংবাদিকরা প্রতিবাদ জানায়। সিনিয়র সাংবাদিক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের বলেন, একজন গণমাধ্যমকর্মীকে এভাবে ধরে কোমরে রশি বেঁধে আদালতে তোলা ন্যাক্কারজনক। এটা সাংবাদিকতা পেশার প্রতি অবজ্ঞার বহি:প্রকাশ। বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জসিম মাহমুদ বলেন, এক শ্রেণির অতি উৎসাহী কর্মকর্তারা পুলিশের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করতে এ ধরনের অপপ্রয়াস চালাচ্ছে। তিনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার শাস্তি দাবী করেন। সুজন- সুশাসনের জন্য নাগরিক ফেনী শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট লক্ষণ বণিক বলেন, ফেনীর তৎকালীন পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম সরকার সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত প্রতিহিংসার বশে সাংবাদিকদেরকে মামলায় জড়িয়েছেন। একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে এভাবে অপদস্ত করা কোনভাবেই আইনসম্মত নয়। সাংবাদিক ইউসুফ আলীকে গ্রেপ্তার করে রশি বেঁধে আদালতে প্রেরণের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে ফেনী রিপোর্টার্স ইউনিটি। সংগঠনের সভাপতি মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম বিষয়টি তদন্তপূর্বক সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান ইমাম বলেন, কোমরে রশি বেঁধে আনার বিষয়টি তার অগোচরে হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা নিয়মানুযায়ী গ্রেপ্তারের পর সাংবাদিককে আদালতে পাঠিয়েছে বলে তিনি জানান।
ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান বলেন, অতিরিক্ত সতর্কতা স্বরুপ আসামীর কোমরে রশি লাগানো হয়েছে। তবে গ্রেপ্তারকৃত আসামী সাংবাদিক ছিল বলে জানা ছিল না। যখন জেনেছি, তখন রশি সরিয়ে নিতে বলেছি।

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
- » বাংলাদেশ সম্মিলিত শিক্ষক সমাজ ফেনী জেলা আহবায়ক কমিটি গঠিত
- » ফেনী বন্ধুসভার বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ
- » গাজীপুরে সাংবাদিক তুহিন হত্যার প্রতিবাদে ফেনীতে সাংবাদিকদের মানববন্ধন
- » ফেনীতে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাংবাদিকদের উপর হামলার গোপন পরিকল্পনা ফাঁস
- » জনতার অধিকার পার্টির চেয়ারম্যানের উপর হামলা, সংবাদ সম্মেলন
- » ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য নবায়ন কর্মসূচি উদ্বোধন
- » ফেনীতে হেফাজতের দোয়া মাহফিলে আজিজুল হক ইসলামাবাদী- ‘আলেম সমাজ ঐক্যবদ্ধ থাকলে দেশে আর ফ্যাসিবাদ সৃষ্টি হবে না’
- » ফেনীতে হাফেজ তৈয়ব রহ. স্মরণে দোয়ার মাহফিল
- » ছাত্র জনতার ঐতিহাসিক গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তিতে ফেনীতে বিএনপি’র বর্ণাঢ্য বিজয় মিছিল, সমাবেশ “গণহত্যার দ্রুত বিচার ও অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারের দাবি”
- » ফরহাদনগরে ছাত্রদল নেতা জিয়া উদ্দিনের ভয়ে বসতবাড়ি ছেড়ে পথে ঘুরছে বৃদ্ধা দুই অসহায় বোন